শিক্ষা হলো একটি জাতির মেরুদণ্ড। আর এই শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি নির্মিত হয় বিদ্যালয়কে ঘিরে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের মথুরডাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত আটকোষী উচ্চ বিদ্যালয় আজ শিক্ষার এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষার মান, অবকাঠামো ও শৃঙ্খলার দিক দিয়ে অভাবনীয় অগ্রগতি লাভ করেছে।
আধুনিক অবকাঠামো বিদ্যালয়টিকে একটি উন্নত ও যুগোপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। ছয়তলা ভবনে রয়েছে বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, শিক্ষক মিলনায়তন, এবং মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ। বিদ্যালয়ে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৭ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা, যারা বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে পাঠদান করে থাকেন। শিক্ষকরা নিয়মিত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং আধুনিক পাঠদানের কৌশল ব্যবহার করেন যাতে শিক্ষার্থীরা আরও সহজে ও আনন্দের সাথে শিখতে পারে।
এছাড়াও বিদ্যালয়ে ৪ জন কর্মচারী ও সহকারী রয়েছেন, যারা বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজকর্ম, প্রশাসনিক দায়িত্ব ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। বর্তমানে প্রায় ৪০০+ শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছে। দুটি শাখা—মানবিক ও বিজ্ঞান—চালু রয়েছে, যাতে ছাত্রছাত্রীরা তাদের আগ্রহ ও মেধা অনুযায়ী বিষয় নির্বাচন করতে পারে।
বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস, ডিজিটাল কনটেন্ট ব্যবহার, গ্রুপ ও প্রকল্পভিত্তিক শিক্ষাদান পদ্ধতি চালু রয়েছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠ্যসূচির বাইরে সহশিক্ষা কার্যক্রমেও উৎসাহিত করেন।
আটকোষী উচ্চ বিদ্যালয় শুরু থেকেই পরীক্ষার ফলাফলে ভালো করছে। ২০১২, ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৮০-৯৭ শতাংশের মধ্যে। এই ধারাবাহিক সাফল্য আজও অব্যাহত রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী পরবর্তীতে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে সাফল্যের সঙ্গে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
শিক্ষার পাশাপাশি বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিতর্ক প্রতিযোগিতা, সাধারণ জ্ঞান পরীক্ষা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদিতে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে থাকে। এতে তাদের আত্মবিশ্বাস, যোগাযোগ দক্ষতা ও নেতৃত্বগুণ বৃদ্ধি পায়।
আটকোষী উচ্চ বিদ্যালয় এখন শুধু একটি বিদ্যালয় নয়, বরং একটি প্রেরণা ও স্বপ্ন পূরণের কেন্দ্র। এখানকার শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। বিদ্যালয়টি তার পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও নিষ্ঠার মাধ্যমে রাজশাহীর শিক্ষাক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠেছে।








